
২৩ ডিসেম্বর,২০১৭ দুপুর বেলার সময় এই সেলফিটি তুলে আমরা কমলাপুর থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। দূরে কোথাও ট্রেনে করে এইটাই আমার প্রথম ভ্রমণ। ট্রেনটা বাংলা সিনেমার ট্রেনগুলোর মতো ছিল (মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস) আমাদের বগি ছিলো-"ছ" । ১১ ও ১২ নং সিটে বসে বেশ আরাম আয়েস ও গপ্প-সপ্পর মাধ্যমে আমরা আমাদের যাত্রা শেষ করি সন্ধ্যার দিকে। ময়মনসিংহে আমি এই প্রথম আসলাম। ময়মনসিংহ স্টেশনটা দেখলে সাদাকালো সিনেমার স্টেশনগুলার কথা মনে পড়ে যায়। আমরা স্টেশন থেকে বের হয়ে যাওয়াদের বাসায় পৌছাই। বাসায় গিয়েই আংকেল-আন্টিকে দেখতে পাই। আংকেল-আন্টি আমাদের অনেক আপ্যয়ন করেন। ওই দিন খুবই ক্লান্ত ছিলাম বাকিটা ইতিহাস।

এরপর গেলাম জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালায় এইখানের প্রতিটা মূহুর্ত ছিল স্পর্শকাতর। জয়নুল আবেদিনের আকা ছবিগুলো খুব সুন্দর ভাবে সংগ্রহ করা আছে সেইখানে। আমি সেইখানে তার বিখ্যাত চিত্রকর্ম মনপুরা-৭০ দেখেছি। তার আকা দুর্ভিক্ষের ছবি গুলো আসলে মন ছুয়ে যাওয়ার মতো।
এরপর দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পর আমরা বাঙ্গালীপনার সেই নগর দোলায় উঠেছিলাম। এরপর শশী লজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সময়ের অভাবে ঘুরতে পারিনি। তবে জায়গাগুলো বেশ সুন্দর।
এরপর ২৫ তারিখে সকালের নাস্তার পর আমরা সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হই। সিরাজগঞ্জে যাওয়ার পথে অনেক রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলাম। সিরাজগঞ্জে পৌছানোর পর আমার থেকে মহা খুশি মনে হয় না আর কেউ ছিল।
কড্ডার মোড় থেকে ইউসুফ ও নাঈম ভাই আমাদেরকে বাইকে করে ইউসুফের বাসায় নিয়ে যায়। তারপর একটু বিশ্রাম নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার পর আমরা আবার বের হই। ইউসুফ ওদের ছোট্ট তামাই (তাঁত শিল্প ইউনিয়ন) গ্রামটি দেখাতে নিয়ে যায়। ওদের গ্রামের বিশেষত্ব হচ্ছে তাঁত শিল্প যদিও ওদের গ্রামে শুধু লুঙ্গি বানানোর কাজ হয় তবুও গ্রামটি অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্ত। গ্রামটি ঘুরে মনে হয়েছে গ্রামের প্রতিটি মানুষ তাঁত শিল্পের সাথে জ়ড়িত। ইউসুফের আরেক বন্ধু শান্ত ভাই আমাদেরকে একটি লুঙ্গি কারখানায় কীভাবে লুঙ্গি তৈরী হয় সেই প্রক্রিয়া দেখিয়েছিল। আমি এর আগেও এই রকম কারখানা দেখেছি তবে ঐটা জামদানি শাড়ির ছিল আর ঐটা ছিল সম্পুর্ণ হাতের কাজ কিন্তু ওদের গ্রামের কারখানার মতো অতটা পূর্ণাঙ্গ ছিল না।
রাতের বেলা আবার কনকনে শীতের মধ্যে "বিবিকিউ"র আয়োজন। যথাযথ একটা রাত ছিল সেইদিন।
পরের দিন আমরা সকালের নাস্তার পর সিরাজগঞ্জ, শাহজাদপুর রবীন্দ্রনাথের কাচাড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
রবীন্দ্রনাথের কাচাড়ি বাড়িতে দেখার মতো কিছু নেই তবে বাড়িটি ঘুরে বুঝলাম- রবীন্দ্রনাথ অনেক বিলাসি জীবন কাটিয়েছে।
আসার পথে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি ঘুরে এসেছিলাম। সিরাজগঞ্জে এতো সুন্দর একটি ইউনিভার্সিটি আছে আমি জানতামই না আর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজের তো নামই শুনি নাই, আমি মেডিকেল নিয়ে পড়লে হয়তো এইটাতেই পড়তে চাইতাম, তখন হয়তো আমার অনেক কাশ্মিরী বান্ধুবী থাকতো। ^_^
আমরা ওইখান থেকে ষ্টেষনে চলে যাই এরপর চিত্রা একপ্রেসের আবারো সেই "ছ" নম্বর বগিতে করে প্রাণের শহর ঢাকায় ফিরে আসি।
এই ছিলো আমার অভিজ্ঞতা শেষে একটি কথাই বলবো-
Arm yourself well before go to north!
1 মন্তব্য(গুলি):
Ekta movie bananor drk... A million ways to die in North ��
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন